সাফিনা পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য
গ্রিন ভ্যালি পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য জানুনসুপ্রিয় পাঠক, সাফিনা পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য এবং সাফিনা পার্কে যাওয়ার উপায় ও সাফিনা পার্কের আশ-পাশের দর্শনীয় স্থান এবং সাফিনা পার্কে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।এই আর্টিকেলে সাফিনা পার্কের সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সাফিনা পার্কে কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি খাবেন তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। এবং সাফিনা পার্কের আশ-পাশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে।
সূচিপত্রঃ সাফিনা পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্যসাফিনা পার্কের অবস্থান
রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় ২০১২ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাফিনা পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৪০ বিঘা জায়গার উপর। গোদাগাড়ী সদর থেকে ৮-৯ কিলোমিটার দূরে সাফিনা পার্কের অবস্থান। তবে মধ্যবর্তী সময়ে প্রায় ২বছর সাফিনা পার্কের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
তবে ২০১৮ সালে সেটি আবার পুনরায় চালু করা হয়। বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলের বিনোদনের হটস্পটে পরিণত হয়েছে সাফিনা পার্ক। নানান রকমের ফুল-ফল ও ঔষধি গাছ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা এবং কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়েছে পশু-পাখির আকর্ষণীয় ভাস্কর্য। যা দেখার জন্য রাজশাহীর আশ-পাশের এলাকার মানুষ প্রতিনিয়ত ভ্রমণ করতে আসে সাফিনা পার্কে।
শিশুদের বিনোদন দেওয়ার জন্য দোলনা, নাগরদোলা, ট্রেন কিডস স্পোর্টস ও থ্রিডি সিনেমার ব্যবস্থা রয়েছে। কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়েছে ২টি লেক যা সাফিনা পার্কের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। দর্শনার্থী চাইলে নৌকায় ঘুরে বেড়াতে পারে সেই লেকে। কোন দর্শনার্থী চাইলে কৃত্রিম লেকে মাছ ধরার সুযোগ রয়েছে। তবে সেটা পার্ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষ।
যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পার্কের ভিতর রয়েছে কনফারেন্স রুম, মঞ্চ ও পিকনিক স্পট। তাছাড়া দর্শনার্থীর কেনাকাটার সুবিধার্থে পার্কের অভ্যন্তরে মার্কেট নির্মাণ করেছে সাফিনা পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সাফিনা পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য
সাফিনা পার্ক সপ্তাহে ৭দিন সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকে। প্রতিদিন সকাল ৮টা হতে বিকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এই সময়ের মধ্যে যে কোন দর্শনার্থী পার্কে প্রবেশ করতে পারে ও বাইরে আসতে পারে। সাফিনা পার্কে প্রবেশের টিকিট মূল্য জন প্রতি ৫০ টাকা মাত্র।
তাছাড়াও সাফিনা পার্কে গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা আছে, মটোরসাইকেল পার্কিং ফ্রি ২০ টাকা, অটোগাড়ি ৫০ টাকা, প্রাইভেটকার ১০০ টাকা এবং বাস ৩০০ টাকা।
সাফিনা পার্কে যাওয়ার উপায়
সাফিনা পার্কে যাওয়ার জন্য আপনাকে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমে রাজশাহীতে আসতে হবে। তার পরে যেতে হবে গোদাগাড়ী সদরে এবং সেখান থেকে যেতে হবে সাফিনা পার্কে। আর যদি ঢাকা থেকে আপনি যদি সাফিনা পার্কে যেতে চান তাহলে সড়ক পথ, রেলপথ ও আকাশ পথে যাওয়া যায়।
সড়কপথে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার জন্য আপনি চাইলে বাস ব্যবহার করতে পারেন। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, আব্দুল্লাপুর, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, সহ যেকোনো বাস টার্মিনাল থেকে টিকিট কেটে বাসে চড়ে রাজশাহীতে আসতে পারেন।
বর্তমান সময়ে ঢাকা-রাজশাহী রুটে যাত্রী-সেবা দানকারী বাসগুলো হলো হানিফ, দেশ ট্রাভেলস, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস, একতা ট্রান্সপোর্ট, চাঁপাই ট্রাভেলস সহ আরো অনেক নামি-দামি অপারেটর। বর্তমান সময়ে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ননএসি চেয়ারকোচ বাসের ভাড়া ৬৯০ টাকা অপরপক্ষে এসি গাড়ির ভাড়া ৮০০-১১০০ টাকার মধ্যে।
অপরপক্ষে ট্রেনে করে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, ধুমকেতু এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস সহ অনেক আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে ঢাকা-রাজশাহী রুটে। ট্রেনের প্রতি টিকিটের মূল্য ৩৪০- ৬৬৫ টাকা পর্যন্ত।
তাছাড়া আপনি চাইলে ঢাকা থেকে আকাশ পথে রাজশাহীতে যেতে পারেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঢাকা থেকে রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে চলাচলকারী বিমানগুলো হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। বিমানের ভাড়া সময় সাপেক্ষে কমবেশি হয়ে থাকে।
রাজশাহী শহরে আসার পর সিএনজি, অটো রিক্সা অথবা ভ্যান গাড়িতে চড়ে যেতে হবে গোদাগাড়ী জিরো পয়েন্টে সেখান থেকে ৮-৯ কিলোমিটার দূরে সাফিনা পার্ক অবস্থিত।
সাফিনা পার্কে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
আপনি যদি সাফিনা পার্কে ভ্রমণ করতে আসতে চান তাহলে অগ্রিম বুকিং দিতে পারেন সাফিনা পার্কের বিলাসবহুল রেস্ট হাউজ। তাছাড়া রাজশাহী শহরেও থাকা খাওয়ার জন্য অনেক ভালো মানের হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও আবাসিকের ব্যবস্থা রয়েছে।
রাজশাহী শহরের বিলাসবহুল হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল এক্স, রয়েল রাজ, গ্রিন রিভার, গ্রীন সিটি ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল ও পর্যটন কর্পোরেশন সহ নামি-দামি হোটেল। পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার সুযোগ রয়েছে সাফিনা পার্কের রেস্টুরেন্টে।
তাছাড়াও গোদাগাড়ী সদরে অনেক ভালো মানের খাবার হোটেল খুঁজে পাবেন। সেসব হলো রহমতুল্লাহ হোটেল, তৈমুর আলী হোটেল ও বিসমিল্লাহ হোটেল। তাছাড়াও রাজশাহী শহরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে চাইনিজ খাবার, বাংলা খাবার ও ফাস্টফুড সহ সকল ধরনের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
সাফিনা পার্কের আশ-পাশের দর্শনীয় স্থান
গোদাগাড়ী সদর থেকে সাবিনা পার্কে যাওয়ার সময় খেজুরতলা এলাকায় রাস্তার দুই পাশে সবুজের সমাহার দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। পাশাপাশি সন্ধ্যার সূর্যাস্ত বেশ উপভোগ করতে পারবেন পদ্মা নদীর ধারে বসে।
তাছাড়াও রাজশাহীতে ভ্রমণ কালে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু নবথিয়েটার ও কামরুজ্জামান উদ্যান,শহীদ জিয়া শিশু পার্ক, বাঘা শাহী মসজিদ ও পুঠিয়ার রাজবাড়ি সহ ঘুরে দেখতে পারেন আরো অনেক দর্শনীয় জায়গা। বিশেষ করে রাজশাহী শহরের রাতের সৌন্দর্য দেখলে আপনি পুরো মুগ্ধ হয়ে যাবেন।
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক, দেশ ইনফো বি.আর ওয়েবসাইটের এই আর্টিকেলে সাফিনা পার্কে প্রবেশের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য এবং সাফিনা পার্কে যাওয়ার উপায় ও সাফিনা পার্কের আশ-পাশের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের শেয়ার করে দিন।
দেশইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url