আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানার উপকারিতা জানুন

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও টমেটো চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনসুপ্রিয় পাঠক, আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানার উপকারিতা এবং সাবুদানার পুষ্টিগুণ ও সাবুদানা কিভাবে তৈরি হয় এবং সাবুদানা খেলে কি মোটা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানার উপকারিতা জানুন
এই আর্টিকেলে সাবুদানা কিভাবে তৈরি হয়, সাবুদানার উপকারিতা, সাবুদানার অপকারিতা পাশাপাশি সাবুদানার দাম কত সে সকল তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানা খাওয়ার ফলে আপনার দেহের কোন কোন সমস্যার সমাধান পাবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে।
সূচিপত্রঃ আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানার উপকারিতা জানুন

সাবুদানা কিভাবে তৈরি হয়

বর্তমান সময়ে জ্বর সারাতে অথবা বাচ্চাদের খাদ্য হিসেবে সাবুদানা ব্যবহার করা হয়। আবার অনেক মানুষ শরীরকে শীতল রাখতে এবং শরীরে পাওয়ার বুস্টার হিসেবে সাবুদানা খেয়ে থাকে। তবে আমরা অনেকেই জানিনা সাবুদানা কিভাবে তৈরি হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সাবুদানা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য,

সাবুদানা তৈরি করা হয় মূলত ক্যাসাভা গাছের মূল দিয়ে, তবে ক্যাসাভা ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে এটি খাওয়ার উপযোগী করা হয় তাছাড়া ক্যাসাভা গাছের মূল মানুষের শরীরের জন্য বিষাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে নাইজেরিয়া সবচাইতে বেশি ক্যাসাভা গাছের উৎপাদনকারী দেশ এবং থাইল্যান্ড সর্ববৃহৎ ক্যাসাভা রপ্তানিকারী দেশ হিসেবে পরিচিত। সাবুদানা তৈরির জন্য প্রথমে ক্যাসাভা গাছ সংরক্ষণ করা হয় তারপর মেশিনে বাছাইয়ের মাধ্যমে ক্যাসাভা গাছের ময়লা ও ধুলাবালি পরিষ্কার করা হয় এবং মূল থেকে ছাল গুলো আলাদা করা হয়ে থাকে।

তারপরে সেগুলোকে গ্রাইনডারে পাঠিয়ে খুবই মিহি ভাবে গুড়া তৈরি করা হয় এবং গুড়াগুলো কে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি মিশিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয় তারপর মার্ক যুক্ত পানিগুলো আলাদা করা হয় এবং সেই পানিগুলোকে ততক্ষণ পর্যন্ত শুকানো হয় যতক্ষণ না এগুলোর ঘন আকার ধারণ করে। এবং তা সংরক্ষণ করার পর পরিষ্কার পানি ও ঘন মার্ক পাউডারের সাহায্যে ধুয়ে ফেলা হয়।

সাবুদানা তৈরি করতে সেই গুড়াগুলোর সাথে পানি মিশিয়ে আটার-ডো এর মতো তৈরি করা হয় এবং পরে তা ছোট ছোট বল আকার দেওয়া হয় যা খুবই সুন্দর সাবুদানা হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাবুদানাকে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন ড্রিংকস, ফালুদা, সাবু চুপ ইত্যাদি।

সাবুদানার পুষ্টিগুণ

মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় সাবুদানা খেয়ে থাকে কিন্তু অনেকেই সাবুদানার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানেনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক সাবুদানার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে, সাবুদানায় সবচাইতে বেশি থাকে পানি তাছাড়াও রয়েছে,
  • ভিটামিন
  • ফাইবার
  • প্রোটিন
  • ফ্যাট
  • সোডিয়াম
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • পটাশিয়াম
  • আয়রন
  • ফসফরাস
  • জিংক
  • ফাইবার
  • কার্বহাইড্রেট
  • ক্যালসিয়াম
  • ক্যালোরি
  • পানি

আসল সাবুদানা চেনার উপায়

সাবুদানা খুব সহজে হজমশিল এবং সহজ শর্করা জাতীয় একটি খাবার। তাছাড়াও সাবুদানা তে অনেক খাদ্য উপাদান রয়েছে যার কারণে ছোট বড় সবাই সাবুদানা খেয়ে থাকে।

বর্তমান বাজারে সাবুদানার অধিক চাহিদা থাকার কারণে বাজারে আসল সাবুদানার পাশাপাশি নকল সাবুদানাও পাওয়া যায় যার ফলে মানুষ আসল বা নকল সাবুদানা চিনতে পারে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক আসল সাবুদানা চেনার উপায় সম্পর্কে,

আসল সাবুদানা চেনার উপায় এর জন্য আপনি যা করতে পারেন তা হলো, বাজার থেকে দুই ধরনের সাবুদানা কিনে বাসায় আনার পর কমপক্ষে এক ঘন্টা আলাদা আলাদা পাত্রে ভিজিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখার পর দুই পাত্রের সাবুদানা দুই হাতে নিয়ে হালকা করে চাপ দিন যেটা একেবারে গলে যাবে সেটা নকল সাবুদানা যা আটা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

এবং যেটা গলে যাওয়ার পরও সামান্য পরিমাণে দানা রয়েছে সেটা আসল সাবুদানা কারণ গাছের শিকড় দিয়ে সাবুদানা তৈরি করার কারণে সেটার মধ্যে দানাদার পদার্থ রয়েছে। এবং আসল সাবুদানা ভিজিয়ে রাখার পানি ঘোলাটে লালচে সাদা ভাব ধারণ করবে এবং নকলটা স্বচ্ছ সাদা ধবধবে হয়ে থাকবে। তারপরে আসল সাবুদানার সাইজগুলো সব একই রকমের হয়।

আবার আসল সাবুদানা রান্না করার পূর্বে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে তাছাড়া সহজে রান্না করা যাবে না। অপরপক্ষে আসল সাবুদানা রান্নার পর দানাগুলো স্বচ্ছ দেখাবে এবং নকল সাবুদানা রান্নার পর কালচে বর্ণ ধারণ করবে

গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি করার ফলে আসল সাবুদানা কখনোই পুরোপুরি গলে যাবে না আর নকল সাবুদানা আটা দিয়ে তৈরি করার ফলে পানি দেওয়া মাত্রই খুব সহজে গলে যাবে।

সাবুদানার উপকারিতা

সাবুদানা মূলত ছোট শিশুদের খুবই প্রিয় খাবার। সাবুদানাতে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান থাকায় সেটা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষও খেতে পারে। কারণ সাবুদানা খাওয়ার ফলে খুব দ্রুত সময় শরীরে পুষ্টি জোগাতে কাজ করে থাকে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক সাবুদানার উপকারিতা সম্পর্কে,
  • ঋতুস্রাবের সময়
মহিলাদের ঋতুকালীন সময়ে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে যে রক্তক্ষরণ হয় তা কমানোর জন্য এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে খুব সহায়তা করে থাকে সাবুদানা। কেননা সাবুদানা তে থাকা ক্যালোরি এবং ফোলেট যে কোন মানুষের শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে নিয়মিত সাবুদানা রান্না করে খেতে পারেন কেননা সাবুদানাতে থাকা পটাশিয়াম হৃদপিন্ডের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক দূর করতে সহায়তা করে থাকে পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে।
  • শরীরের জ্বর কমাতে
আমাদের শরীরের জ্বর হলে শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ক্ষুধা অনেক কমে যায় আর সেই দুর্বলতা দূর করতে আপনি সাবুদানা খেতে পারেন। শরীরে জ্বর থাকা অবস্থায় সাবুদানার খিচুড়ি খেলে শরীরে তাৎক্ষণিক ক্যালোরি, পটাশিয়াম এবং প্রোটিন ফিরে আসবে যা শরীরের শক্তি যোগাবে এবং খাবারের প্রতি রুচি বৃদ্ধি করবে।
  • শরীরের হাড় মজবুত করতে
ছোট বাচ্চা এবং বয়স্ক লোকের জন্য সাবুদানা খাওয়া অত্যন্ত জরুরী কেননা সাবুদানা খুবই নরম হওয়ার জন্য তা সহজে খাওয়া যায় এবং সাবুদানাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা ছোট শিশুদের শারীরিক গঠন সুন্দর করতে কাজ করে থাকে। তাছাড়াও বয়স্কদের মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয় রোধে সাবুদানা খুবই কার্যকরী খাদ্য।

এমনকি হাত পায়ে আঘাত পাওয়ার পর বা শরীর দুর্বল মনে হলে আপনি নিয়মিত সাবুদানা খেতে পারেন যা আপনার শরীরের দুর্বলতা দূর করার পাশাপাশি হাড় মজবুত করবে।
  • রুচি বৃদ্ধি করতে
যাদের খাবারের প্রতি অনীহা রয়েছে এবং খাবারের স্বাদ বুঝতে পারেন না তারা নিয়মিত সাবুদানা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কেননা সাবুদানার উপাদান জিহ্বার স্বাদকে বাড়িয়ে তুলতে কাজ করে থাকে পাশাপাশি অরুচি দূর করে থাকে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
সাবুদানার উপকারিতা যতগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা। কারণ মানুষের শরীরের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাবুদানাতে থাকা আঁশ এবং ফাইবার অনেকটা সাহায্য করে থাকে।

সাবুদানার সবচাইতে উপকার হলো এটি খুব দ্রুত পানির সাথে মিশে গিয়ে শরীরের খাদ্যকে পরিপাক করতে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • প্রদাহ দূর করে
আসল সাবুদানা চেনার উপায় সম্পর্কে জানার পর আপনি যদি আসল সাবুদানা সংগ্রহ করে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে। শরীরের প্রদাহ দূর করার জন্য সাবুদানা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী কেননা সাবুদানা খুব দ্রুত পানির সাথে মিশে গিয়ে শরীরে পানির ঘাটতি মেটাতে কাজ করে থাকে।

তাছাড়াও সাবুদানাতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের ব্যথা দূর করার পাশাপাশি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে কাজ করে থাকে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে
নিয়মিত সাবুদানা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। কেননা সাবুদানাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর দুটি পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। ক্যান্সার রোগের ফ্রি রেডিক্যাল গুলো ধ্বংস করে ক্যান্সার রোগ নিরাময় করা সম্ভব সাবুদানা খাওয়ার ফলে।
  • ত্বকের যত্নে সাবুদানার উপকারিতা
সাবুদানার পুষ্টিগুণ আমাদের ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে থাকে কেননা সাবুদানা হচ্ছে প্রাকৃতিক ভেষজ ফ্রেস মাক্স। আপনি চাইলে সাবুদানা ব্যবহার করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন তার জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, আসল সাবুদানার গুঁড়া সংগ্রহ করার পর দুধ এবং মধু মিশিয়ে ফ্রেস মাক্স তৈরি করে সেটি নিয়মিত ব্যবহার করুন।

কারণ সাবুদানাতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন এবং পটাশিয়াম ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি করে ত্বককে সুন্দর, নরম ও মসৃণ করে প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করা
সাবুদানার বিশেষ গুণ হলো তা খুব সহজেই পানির সাথে মিশে যেতে পারে। তার ফলে আপনি যদি নিয়মিত সাবুদানা খান তাহলে খুব সহজে সেটি শরীরের সাথে মিশে গিয়ে পরিপাকতন্ত্রকে খাবার হজম করতে সাহায্য করার পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্রের নালী পরিষ্কার করে মল নির্গমনে সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত সাবুদানা খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব।
  • ওজন বৃদ্ধি করতে
যাদের শরীর অনেক চিকন বা পাতলা তারা নিয়মিত সাবুদানা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন কেননা সাবুদানা ক্যালরিযুক্ত একটা খাদ্য। যা খাওয়ার ফলে শরীরে ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি শক্তি যোগায় এবং খাবারের প্রতি রুচি ফিরিয়ে আনে যাতে করে শরীরের ওজন বৃদ্ধি হয়।
  • গর্ভাবস্থায় সাবুদানার উপকারিতা
সাবুদানাতে থাকা ফোলেট এবং ভিটামিন-বি৬ যা গর্ভে থাকা সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি ও শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে থাকে সাবুদানা।

আবার সাবুদানাতে কার্বোহাইড্রেট ক্যালরি রয়েছে অধিক পরিমাণে যা গর্ভের সন্তানের মানসিক বিকাশে সহায়তা করে থাকে। তবে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা গর্ভাবস্থায় সাবুদানা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে
যারা মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে চান, চুলের খুশকি দূর করতে চান এবং চুল বৃদ্ধি করতে চান তারা নিয়মিত সাবুদানার গুঁড়া খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ সাবুদানার গুড়াতে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো এসিড, ক্যারোটিন ও প্রোটিন রয়েছে যা চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চুলের গোড়া শব্দ করে ও চুল ঘন এবং সিল্কি করে তুলতে সাহায্য করে।

সাবুদানার অপকারিতা

সাবুদানার উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি সাবুদানার অপকারিতাও রয়েছে। কেননা আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে সাবুদানা খেয়ে থাকেন তাহলে উপকারের চাইতে ক্ষতি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার কিছু কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে সাবুদানা অবশ্যই পরিমাণমতো খেতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সাবুদানার অপকারিতা দিকগুলো,
  • ডায়াবেটিস
যেসব মানুষের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য সাবুদানা খাওয়া তেমন উপকারী নয় কারণ সাবুদানাতে থাকা শর্করা এবং উচ্চ ক্যালোরি ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করতে পারে যাতে মারাত্মক আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
অতিরিক্ত পরিমাণে সাবুদানা খাওয়ার ফলে বদহজম, পেটব্যথা, পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হওয়া, বমি হওয়া, বুক জ্বালাপোড়া করা সহ নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ সাবুদানাতে উচ্চ পরিমাণে খাদ্য ক্যালোরি, ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। সে কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বাঁচতে অবশ্যই পরিমাণ মতো সাবুদানা খাবেন।
  • হৃদরোগ বৃদ্ধি করা
সাবুদানাতে উচ্চ কালোরী, কার্বোহাইড্রেট, শর্করা ও ফাইবার রয়েছে সে কারণেই সাবুদানা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধির সমস্যা ও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
  • লিভারের ক্ষতি করা
কখনোই সাবুদানা অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না কারণ সাবুদানাতে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন ও ক্যালোরি রয়েছে উচ্চ হারে যা অতিরিক্ত বমি হওয়া থেকে শুরু করে শরীর দুর্বল করে দিতে পারে এবং লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে
সাবুদানাতে থাকা অতিরিক্ত পরিমাণে স্টার্চ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে শরীরকে ক্ষতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

সাবুদানা খেলে কি মোটা হয়

আমাদের অনেকের মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে যে সাবুদানা খেলে কি মোটা হয়। আমি বলব যে না, কারণ স্বাভাবিক মাত্রায় আপনি যদি সাবুদানা খান তাহলে ওজন কখনোই বাড়বে না বরং দেহের অতিরিক্ত ওজন কমবে। মনে রাখতে হবে যে সাবুদানা হলো উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাদ্য সে কারণে কখনোই অতিরিক্ত সাবুদানা খাওয়া যাবেনা।

পাশাপাশি সাবুদানাতে ক্যালরি ছাড়াও ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন রয়েছে যা মানুষের দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে এবং দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে যাদের ওজন বৃদ্ধি করার প্রয়োজন তারা চাইলে একটু বেশি সাবুদানা খেয়ে ওজন বৃদ্ধি করতে পারেন।

সাবুদানার দাম কত

আমরা এই আর্টিকেলে আসল সাবুদানা চেনার উপায়, সাবুদানার পুষ্টিগুণ, সাবুদানার উপকারিতা এবং সাবুদানার অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক সাবুদানার দাম কত সেই সম্পর্কে,

বাজারে বিভিন্ন দামের সাবুদানা রয়েছে কেননা সাবুদানার মধ্যেও ভালো-মন্দ দেখা যায়। পাশাপাশি সাবুদানার দাম বাজারের চাহিদার উপর নির্ভর করে ওঠা নামা করে তবে বর্তমানে আপনি যদি অনলাইন থেকে ১০০ গ্রাম সাবুদানা কিনতে চান তাহলে ডেলিভারি চার্জসহ ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

যেহেতু সাবুদানা বাংলাদেশে উৎপাদন করা হয় না সম্পূর্ণ বাহিরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয় সেক্ষেত্রে দাম ওঠানামা করা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে কেনার আগে অবশ্যই বিক্রেতার সাথে কথা বলে নিবেন।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, দেশ ইনফো বি.আর ওয়েবসাইটের এই আর্টিকেলে আসল সাবুদানা চেনার উপায় ও সাবুদানার উপকারিতা এবং সাবুদানার পুষ্টিগুণ ও সাবুদানা কিভাবে তৈরি হয় এবং সাবুদানা খেলে কি মোটা হয় সেই সব তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দেশইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url