ফুটবল খেলার নিয়ম জানুন

সুপ্রিয় পাঠক, ফুটবল খেলার নিয়ম এবং ফুটবল খেলার উৎপত্তি ও ফুটবল খেলার বিস্তার এবং ফুটবল খেলা বিস্তারে ফিফার কার্যক্রম ও ফুটবল খেলার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ফুটবল খেলার নিয়ম কানুন জানুন
ফুটবল খেলা বিস্তার করার জন্য প্রতিনিয়ত ফিফা কি কি কাজ করে থাকে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে এই আর্টিকেলে। পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতে ফুটবল খেলার উপকারিতা এবং ফুটবল খেলার ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে এই আর্টিকেলে।
সূচিপত্রঃ ফুটবল খেলার নিয়ম জানুন

ফুটবল খেলার উৎপত্তি

বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় একটি খেলা হলো ফুটবল। যার প্রচলন রয়েছে সমগ্র বিশ্বে, বলা হয়ে থাকে ফুটবল খেলা শুরু হয়েছিল চীনে। তবে আধুনিক ফুটবল খেলার উৎপত্তি হয় সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে। যার জন্য আধুনিক ফুটবলের জনক বলা হয় ইংল্যান্ডকে।

খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ এর দিকে চীনে সর্বপ্রথম ফুটবল খেলা দেখা যায়, তবে সেটা আধুনিক ফুটবলের মত ছিল না তার নামও ছিল ভিন্ন। তবে আধুনিকভাবে ফুটবল খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড, যার ন্যায় ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থা ফিফার মতে আধুনিক ফুটবলের জনক বলা হয় ইংল্যান্ডকে।

ফুটবল খেলার বিস্তার

খুব অল্প সময়ের মধ্যে সারা বিশ্বে ফুটবল খেলা খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যার ন্যায় সমগ্র বাংলাদেশেও ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা অনেক। বর্তমান সময়ে স্কুল-কলেজ সব জায়গায় ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা রয়েছে। যার ন্যায় সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ও ফুটবল খেলায় অনেক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

পৃথিবীর উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও নানা রকম ফুটবল একাডেমী, ফুটবল ক্লাব, ফুটবল ফেডারেশন গঠন করা হয়েছে। তার পাশাপাশি শহর থেকে গ্রামে প্রতিটি প্রত্যন্ত এলাকায় ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা নিয়ে বা ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এসব একাডেমী, ক্লাব বা ফেডারেশন ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

যেখান থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা উঠে আসছে খেলার জন্য। এভাবেই ফুটবল খেলার বিস্তার ঘটানো হচ্ছে।

ফুটবল খেলার ব্যবস্থা

সর্বপ্রথম খেলার মাঠ প্রস্তুত করতে হবে। ফুটবল খেলার মাঠের দৈর্ঘ্য ১২০ গজ ও প্রস্থ ৮০ গজ হয়। তবে ঘাসযুক্ত মাঠ ফুটবল খেলার জন্য উপযোগী। মাঠের দুই প্রান্তে গোলপোস্ট স্থাপন করতে হবে। গোল পোস্টের পিছনে শক্ত সুতা দিয়ে ভালোভাবে চারকোনা করে ছাউনি দিয়ে রাখতে হবে, যাতে করে গোলপোস্টের বাইরে বল যেতে না পারে বা বাইরে থেকে বল ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।

মাঠের চারপাশে দর্শক বসার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। তবে মাঠের এরিয়া ও দর্শক বসা স্থানের মাঝখানে একটু ফাঁকা রাখতে হবে যাতে খেলার সময় দর্শক ও খেলোয়াড়দের সংঘর্ষ না ঘটে। খেলোয়াড় ও দর্শক মাঠে প্রবেশ করার জন্য জায়গা রাখতে হবে যেখানে সাধারণ মানুষের কোলাহল যাতে না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এভাবে ফুটবল খেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ফুটবল খেলার নিয়ম

সমগ্র বিশ্বে যতগুলো খেলার প্রচলন রয়েছে প্রতিটা খেলার নিয়ম রয়েছে, তেমনি ফুটবল খেলতেও অনেক নিয়ম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রথমে বল মাঠের মাঝখানে রাখতে হবে তারপর দুই দলের ৯ জন অথবা ১১ জন করে খেলোয়াড় মাঠের মধ্যে প্রবেশ করাতে হবে। 

মাঠ পরিচালনা করার জন্য ৩ জন রেফারির প্রয়োজন, ২ জন দুই সাইডে থাকবে এবং একজন রেফারি সমগ্র মাঠে খেলা পরিচালনা করবে। তারপর দুই দলের গোলরক্ষককে গোলের তলায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর প্রত্যেকটা খেলোয়াড় কে তাদের পজিশন অনুযায়ী নিজেদের সীমানাই থাকতে হবে।

নির্দিষ্ট একটা সময় বেঁধে দিতে হবে খেলার জন্য। এরপর রেফারি বাঁশি দেওয়ার সাথে সাথে খেলা শুরু করতে হবে। খেলার মধ্যস্থলে কিছুটা সময় বিরতি রাখতে হবে। খেলার মধ্যে অনৈতিক কোন কাজ হলে সেটা দেখার দায়িত্ব রেফারির উপর থাকবে।

কোন খেলোয়াড় অনৈতিক কাজ করে থাকলে সেটা ফাউল বলে গণ্য হবে এবং বিপক্ষ দল একটি ফাউল কিক মারার সুযোগ পাবে। আবার কোন দলের খেলোয়াড়ের যদি হাতে বল লাগে তবে সেটা হ্যান্ডবল বলে গণ্য করা হবে এবং বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা একটি হ্যান্ডবল মারার সুযোগ পাবে।

কোন দলের খেলোয়াড়ের পায়ে অথবা শরীর স্পর্শ করে বল যদি নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে চলে যায় তাহলে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা থ্র করার সুযোগ পাবে।

রেফারীর দুই সহকারী তারা দেখবেন যাতে বল ছাড়া এক দলের খেলোয়াড় বিপক্ষ দলের গোলের সীমানায় প্রবেশ করতে না পারে যদি প্রবেশ করে থাকে তবে সেটা অফসাইড বলে গণ্য করা হবে। খেলা চলাকালীন গোলরক্ষক ব্যতীত ফুটবল কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারবে না, যদি স্পর্শ করে তাহলে সেটা হ্যান্ডবল বলে গণ্য করা হবে।

একমাত্র গোলরক্ষক হাত দিয়ে বল স্পর্শ করতে পারবে তবে সেটা তার গোলের নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে। তারপর খেলার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি কোন দল গোল করতে পারে তাহলে নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পর সেই দল বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হবে। আর যদি নির্দিষ্ট সময়ে কোন দল গোল করতে না পারে বা দুই দলের গোলের মধ্যে সমান অবস্থান থাকে তাহলে সেটা ড্র বলে গণ্য হবে।

যদি অতিরিক্ত সময় খেলা চালাতে চাই তার জন্য অতিরিক্ত সময় নির্ধারণ করতে হবে বা ট্রাইবেকারে খেলা শেষ করা যাবে। খেলার মধ্যে কোন খেলোয়াড়ের যদি সমস্যা হয়ে থাকে তার বিপরীতে অন্য খেলোয়াড় নামানো যাবে তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়ার পর।

ফুটবল খেলার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে ফুটবল শুধু অবসর বিনোদন বা সামান্য শারীরিক ব্যায়াম এর মাধ্যম নয় ফুটবল খেলা আয়ের ও একটি উৎস। বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ফুটবল খেলে আর্থিকভাবে টাকা ইনকাম করে থাকে।

আবার নিয়মিত ফুটবল খেলায় যথেষ্ট ছোটাছুটির মাধ্যমে শারীরিক ব্যায়াম হয়ে থাকে যার ফলে দেহে কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। মন ও শরীর দুটোই প্রফুল্ল থাকে যার ফলে পড়াশোনা ও কাজকর্মে ক্লান্তি বা বিরক্ত বোধ আসে না।

নিজের শরীরকে প্রফুল্ল রাখার জন্য অবসর সময় মানুষ ফুটবল খেলাকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করে। আবার বিভিন্ন একাডেমি বা সংগঠন তারা বাণিজ্যিকভাবে ফুটবল খেলার আয়োজন করে যাতে করে মানুষকে বিনোদন দেয়ার পাশাপাশি তারা আর্থিকভাবে টাকা ইনকাম করতে পারে।

যার ফলে আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র ফুটবল খেলার জন্য। সেখানে আর্থিকভাবে টাকা-পয়সা ইনকামের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিভাবান খেলোয়াড় নির্বাচন হয়ে থাকে যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে যায় ফুটবল খেলার জন্য।

এর ফলে ফুটবল একাডেমীর পাশাপাশি ফুটবল সংস্থার পাশাপাশি ও বাংলাদেশের নামও অনেক বিস্তার করে আসছে। বিশেষ করে মানুষ তার নিজের দেহকে সুস্থ সবল রাখতে ও কর্মক্ষম করার জন্য ফুটবল খেলে অবসর সময়ে, ফুটবল খেলার ফলে শরীর ঘামে তার ফলের দেহের নোংরা বা ময়লা সব দূর হয়ে যায় শরীর থাকে সুন্দর ও মসৃণ। তার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে নিস্তার পাওয়া যায় খেলার ফলে।

ফুটবল খেলার অপকারিতা

প্রত্যেকটা কাজেরই উপকার এবং অপকার দুটোই রয়েছে। কেননা ফুটবল একটি শারীরিক শক্তির খেলা, আপনার শরীর যদি অসুস্থ হয়ে থাকে তাহলে ফুটবল খেলা আপনার জন্য উপযুক্ত নয় কেননা শারীরিক লড়াই করতে না পারলে ফুটবল খেলতে গেলে আপনার ক্ষতি বেশি হবে। সেজন্য ফুটবল খেলার জন্য সর্বপ্রথম যে জিনিসটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে শারীরিক ফিটনেস।

তার পাশাপাশি অনেক সময়ও দুর্ঘটনার কারণে মানুষের ক্ষতি হয়ে থাকে ফুটবল খেলতে গেলে তাই সাবধানতা অবলম্বন করে ফুটবল খেলতে হবে কেননা ফুটবল খেলার মাঝখানে হাত পা কেটে যাওয়া, হাত পা ভেঙ্গে যাওয়া, চোখে মুখে আঘাত পাওয়া সহ শরীরের যেকোনো অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।

তাই ফুটবল খেলা উত্তেজনা মূলক খেলা সে কারণে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে ফুটবল খেলা উচিত। তবে সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে খেলা পরিচালনা করলে ক্ষতি অনেক কম হয়।

ফুটবল খেলা বিস্তারে ফিফার কার্যক্রম

সমগ্র বিশ্বের ফুটবলের সবচাইতে বড় ফেডারেশন হলো ফিফা। ফিফার পূর্ণরূপ হল, ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্যা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। এটি ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, ফিফার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে অবস্থিত। ১৯৩০ সালে ১৩ই জুলাই ফিফার প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল উরুগুয়েতে।

বর্তমানে প্রতি ৪ বছর পর পর ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন করে থাকে বিশ্বের নানান দেশে। ফিফার সদস্য রয়েছে ২১১টি দেশ। প্রত্যেকটা দেশের কোডই স্বতন্ত্র। বর্তমান সময়ে ৮টি দেশ আন্তর্জাতিকভাবে ফুটবল খেললেও তারা ফিফার অধিভুক্ত নয়।
৮ টি দেশের নাম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • ফেডারেটেড স্টেটস অফ মাইক্রোনেশিয়া
  • কিরিবাতি
  • মোনাকো
  • নাউরু
  • পালাউ
  • টুভালু
  • মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ
  • ভ্যাটিকান সিটি
তাছাড়া বর্তমান সময়ে ফিফা অত্যন্ত চমক পদ আনন্দ দিয়ে থাকে ফুটবলপ্রেমীদের সমগ্র বিশ্বে আধুনিক ফুটবল বিস্তারের জন্য ফিফার কার্যক্রমের কোন জুড়ি নেই। কেননা প্রতি ৪বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজন করে থাকে ফিফা, যার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে ফুটবল ভক্তরা। আধুনিক ফুটবলকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ফিফা সংস্থার কোন বিকল্প নেই।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, দেশ ইনফো বি.আর ব্লগের এই আর্টিকেলে ফুটবল খেলার নিয়ম কানুন ও ফুটবল খেলার উপকারিতা এবং ফুটবল খেলার উৎপত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেকোনো বিষয়ের আপডেট তথ্য জানতে দেশ ইনফো বি.আর ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দেশইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url