গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় জানুনসুপ্রিয় পাঠক, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এবং গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ এবং গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে ও গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে এবং গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না সহ গর্ভকালীন সময়ের খাদ্য তালিকা কেমন হবে এবং গর্ভকালীন সময়ে কিভাবে চলাফেরা করতে হবে সেই সকল তথ্য।
সূচিপত্র:গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

গর্ভকালীন অবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের যেসব কাজ করা যাবে না সেই সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তোবা সঠিক তথ্য জানিনা। গর্ভবতী মহিলারা যদি সেই সম্পর্কে জানে তাহলে গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের অবস্থা এবং বাচ্চার যত্ন খুব ভালোভাবে নিতে পারবে। পাশাপাশি সঠিক নিয়ম মেনে চললে মা সুস্থ থাকবে এবং বাচ্চার কোন সমস্যা হবে না।

আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ সেই সম্পর্কে সকল তথ্য,
  • ভারী কোন কিছু উঠানো
গর্ভকালীন সময়ে প্রতিটা মানুষের ভারী কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে কেননা গর্ভবতী মহিলা যদি কোন সময়ে ভারী কাজ করে তাহলে যেকোনো সময় তার গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। তাতে করে গর্ভবতী মহিলা এবং বাচ্চার প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাচ্চা হওয়ার কারণে জন্মের পর বাচ্চা নানা রকম সমস্যায় ভুগতে থাকে।

তাই গর্ভবতী মহিলাদের ভারী ব্যাগ উঠানো, ভারী কোন জিনিস উঠানো, পেটে চাপ দিয়ে ভারী কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন সমান জায়গা দিয়ে হাটাহাটি করতে হবে।
  • উপড় হয়ে শোয়া
বর্তমান সময়ে আমাদের অনেক মানুষের বদ অভ্যাস হচ্ছে উপড় হয়ে শোয়া। গর্ভকালীন সময়ে উপড় হয়ে শোয়ার ফলে পেটে চাপ লাগার সম্ভাবনা রয়েছে যাতে করে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণেই গর্ভবতী মহিলাদের কখনোই উপড় হয়ে শোয়া যাবেনা।
  • নিচু হয়ে কোন কিছু উপরে উঠানো
গর্ভকালীন সময়ে অনেক মহিলারা মাটিতে পড়ে থাকা কোন কিছু নিচু হয়ে ওপরে উঠায় আর সেই সময় পেটে চাপ লাগে যেটা গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে নিচু হয়ে কোন হালকা বা পাতলা জিনিসও উপরে উঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • উঁচু-নিচু জায়গা দিয়ে হাটা
গর্ভবতী মহিলাদের সব সময় সমতল ভূমি দিয়ে হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি সিঁড়ি দিয়ে চলাফেরার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। কেননা সিঁড়িতে চলাফেরা করার সময় পেটে ঝাঁকুনি সৃষ্টি হয় যা গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সে কারণে গর্ভবতী মহিলারা সবসময় সমান জায়গা দিয়ে হাঁটার চেষ্টা করবেন।
  • থালা-বাসন ধোয়া
কোন গর্ভবতী মহিলা যদি বসে থেকে থালা-বাসন ধোয়ার কাজ করে তবে সেই সময় তার পেটে চাপ লাগার সম্ভাবনা রয়েছে যা গর্ভের সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেজন্য গর্ভকালীন সময়ে বসে থেকে থালা-বাসন ধোয়ার কাজ করবেন না।

প্রয়োজনে সমান জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে থালা-বাসন ধোয়ার কাজ করতে পারেন। তবে কখনোই থালা-বাসন উপরে উঠাবেন না তাতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
  • ঘুরতে যাওয়া
গর্ভকালীন সময়ে কখনোই গাড়িতে বসে দূরের জার্নি করবেন না। কারণ দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকার কারণে এবং গাড়ির ঝাঁকুনিতে পেটে ব্যাথা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণেই গর্ভবতী মহিলাদের বেশি সময় বাসায় থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী।
  • পেটে চাপ দিয়ে বসা
গর্ভকালীন অবস্থায় এমনভাবে বসতে হবে যাতে কখনোই পেতে চাপ না লাগে। তবে নিচু জায়গায় বসা যাবে না প্রয়োজনে চেয়ারে ও সোফায় বসতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে যাতে করে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়। গর্ভবতী মহিলাদের খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,
  • মাছ
  • মাংস
  • ডিম (পুরোপুরি সিদ্ধ করে খেতে হবে)
  • পাঁচ মিশালি ডাল
  • সবুজ টাটকা শাক-সবজি
  • শুকনো ফল
  • পুদিনা পাতা
  • মধু
  • দুধ (গরম করে খেতে হবে)
  • গরুর মাংস
  • ছোলা
  • সামুদ্রিক মাছ
  • গলদা চিংড়ি
  • ভূট্রা
  • অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার
  • ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার
  • আয়োডিন যুক্ত খাবার
  • কপার ও জিংক যুক্ত খাবার

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে আমরা অনেকেই সঠিক তথ্য জানিনা। গর্ভকালীন সময়ে যদি কোন গর্ভবতী মহিলা সঠিক খাদ্য না খায় তবে সে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তাতে করে গর্ভের বাচ্চার অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে ও বাচ্চা জন্মের সময় অনেক ত্রুটি থাকতে পারে।

সে কারণে গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকার দিকে আমাদের বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। গর্ভকালীন সময়ে কখনোই কোন প্রকারের কোমল পানীয় খাওয়া যাবেনা পাশাপাশি পেঁপে খাওয়া যাবেনা। কারণ পেঁপের আঠায় প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড রয়েছে যার ফলে ব্লেডিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গর্ভকালীন সময়ে আনারস খাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ফ্রিজে রাখা যে কোন খাবার যেমন দুধ, মিষ্টি ও যেকোনো রকমের ফল খাওয়া যাবে না। গর্ভকালীন সময়ের সবচাইতে বড় সতর্কতা হলো যে কোনো রকমের মেডিসিন নেওয়া। রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই কোনো মেডিসিন গ্রহণ করবেন না।

না হলে গর্ভবতী মহিলা এবং গর্ভের সন্তান দুজনেরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি কোন গরবতী মহিলার কাঁচা বা কম সিদ্ধ করা ডিম খাওয়া যাবেনা কারণ তাতে সালমোনিলা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে যা গর্ভের সন্তানের জন্য খুব ক্ষতিকর। রান্না না করা কোন সবজি, খাদ্যশস্য ও সিম খাওয়া যাবেনা।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। কারণ সবাই মনে করে গর্ভাবস্থায় সবজি খাওয়া খুবই উপকারী। কিন্তু আপনি যদি অপ্রয়োজনীয় কোন সবজি খান তাহলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কোন কোন সবজি খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।

গর্ভকালীন সময়ে সম্পূর্ণভাবে কাঁচা পেঁপে খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে কেননা পেঁপেতে থাকা অ্যাসিড যেকোনো সময় আপনার গর্ভপাত করিয়ে দিতে পারে। পাশাপাশি যে সকল সবজিতে অ্যাসিডের মাত্রা অতিরিক্ত বেশি সেই সকল সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত খাবার পরিহার করতে হবে পাশাপাশি নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া ও চলাফেরা করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলারা কোন কোন ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকবে। গর্ভাবস্থায় কখনোই আনারস খাওয়া যাবেনা কেননা আনারসে থাকা অ্যাসিডের কারণে গর্ভবতী মহিলার ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যার ফলে গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভের সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি গর্ভকালীন সময়ে আঙ্গুর ও পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বেশি পরিমাণে অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফল খাওয়া যাবেনা। কারণ অতিরিক্ত অ্যাসিডের কারণে গর্ভের কোমল শিশুর শারীরিক বিকাশের সমস্যা হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না

মাছ মানুষের দেহের আমিষের চাহিদা মেটানোর খাদ্য। গর্ভকালীন সময়ে মাছ খাওয়ার ফলে দেহে আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ঘটতে সাহায্য করে। তবে সব রকমের মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন,

গর্ভকালীন সময়ে কখনোই তেলাপিয়ার মাছ খাবেন না। কারণ তেলাপিয়ার মাঝে ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে কয়েক গুণ যা গর্ভের শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভবতী মহিলারা বিশেষ করে টাটকা ও সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন বিশেষ করে সমুদ্রের গলদা চিংড়ি মাছ।

গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়

গর্ভকালীন সময়ে মানুষের নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। কারো খাবারের অরুচি আসে আবার কেউ টক জাতীয় খাবার বেশি পছন্দ করে। গর্ভকালীন সময়ে আপনি টক খেতে পারবেন তবে সেটা পরিমাণ মতো। তবে গর্ভাবস্থায় কাঁচা অথবা পাকা তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

কারণ তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে টারটারিক অ্যাসিড রয়েছে যার ফলে গর্ভের শিশুর শারীরিক বিকাশে ও মস্তিষ্কের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে টক খাওয়া যাবে কিন্তু সেটা পরিমাণ মতো তবে তেঁতুল না।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় সেই সম্পর্কে আমরা অনেকেই সঠিক তথ্য জানিনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভকালীন সময়ে কোন কোন খাবার খেলে গর্ভের বাচ্চা ফর্সা ও সুন্দর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলা যদি নিয়মিত গরুর দুধ, কলা ও টাটকা শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করে তাহলে অবশ্যই বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হবে।

পাশাপাশি আম ও টাটকা ফলমূল খাওয়ার ফলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি যদি আপনার গর্ভের সন্তানকে সুন্দর দেখতে চান তাহলে অবশ্যই গর্ভকালীন সময়ে টাটকা ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করুন তবে সেটা পরিমাণ মতো।

বিশেষ করে আমে অনেক পুষ্টির গুনাগুন রয়েছে যা শিশুর গায়ের রং ফর্সা করার পাশাপাশি শারীরিক বৃদ্ধি ও মস্তিষ্ক বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

শেষ কথা

সুপ্রিয় পাঠক, দেশ ইনফো বি.আর ব্লগের এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এবং গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ এবং গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। যেকোনো বিষয়ের আপডেট তথ্য জানতে দেশ ইনফো বি.আর ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দেশইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url